আমের মুকুল ঝরে পড়ার কারণ ও প্রতিকার কি?
আমি এখন আলোচনা করবো: আমের মুকুল ঝরে পড়ার কারণ ও প্রতিকার কি? এসকল বিষয়ে। সাথে প্রয়োজনীয় আরও কিছু টিপস তো থাকছেই। চলুন, শুরু করা যাক…
সাধারণত ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে আম গাছের অসংখ্য মুকুলের মধ্যে হাজার হাজার আম-ফুল ধরে। যেখান থেকে আমরা আমের গুটি পেতে পারি। কিন্তু গুটি আসা সত্বেও আমরা সবগুলো গুটি থেকে আম পাই না। এসবের কারণগুলো ঘটে আমের মুকুল ঝরে পড়ার কারণ এ। সুতরাং সকল প্রজাতির আমগুলো তুলনা করে, আমের মুকুল ঝরে পড়ার কারণ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ-
Summary Of Content: multyLoad
আমের মুকুল ঝরে পড়ার কারণ
বিশেষ কয়েকটি কারণে আমের মুকুল ঝরে পড়ে থাকে। যেগুলা আম চাষীদের জেনে রাখা জরুরী। যেমনঃ-
১. অধিক বৃষ্টিপাত, বা শিলাবৃষ্টি অথবা অধিকতর ঘন কুয়াশার কারণ।
২. উর্বর মাটি না থাকলে বা মাটিতে পর্যাপ্ত রসের সঞ্চালন না থাকলে।
৩. হপার পোকার আক্রমণেও মুকুল ঝরে পড়ে যায়, সাধারণত।
৪. অ্যানথ্রাকনোজ নামক রোগ হলে, আমের মুকুল গণহারে ঝরে পড়তে থাকে।
বি.দ্রঃ বিশেষজ্ঞদের মতে- আমের মুকুল ঝরে পড়ার অন্যতম বড় কারণ হলোঃ গাছ যদি প্রাকৃতিকভাবে পানি শোষন করতে না পারে এবং অধিকহারে খড়া হয়।
আমের মুকুল ঝরে পড়া রোধ করার জন্য প্রতিকার
আমের মুকুল ঝরে পড়া রোধ করতে হলে নিচের বিষয়গুলো ফলো করতে পারেনঃ
- সর্বদা আম বাগান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। প্রয়োজনে দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর আগাছা ছাটাই করবেন এবং বাগানে যাতে করে প্রাকৃতিক বাতাস গমন-নির্গমন করতে পারে সেদিকে যত্ন নিবেন।
- মরা বা শুকনা ডাল পালা থাকলে, ছেঁটে ফেলবেন। আর যদি কোন ডালে বা মুকুলে ক্ষতিকারণ পোঁকার আক্রমন ঘটে রোগাক্রান্ত হয়, তাহলে পাতা এবং ডাল পুঁড়িয়ে ফেলতে হবে।
- সাধারণ ফাল্গুন-চৈত্র মাসে এবং সারামাসে আম গাছের নিচে পাতা পড়ে থাকে, সেসকল পাতা কুঁড়িয়ে নিবেন বা পুঁড়িয়ে ফেলবেন।
- আরও পড়তে পারেনঃ-
- প্রচন্ড খড়া পড়ার কারণে , গাছের পানি শূন্যতা হতে পারে। সেজন্য নিয়মিত প্রতিদিন সকালে (সম্ভব হলে, সকাল-বিকাল) গাছের গোঁড়ায় পানি দিবেন।
- সাধারণত আমের মুকুল ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ হলো: হপার পোকার আক্রমণ। এর প্রতিকারের জন্য – আমের মুকুলু গুলো মটরদানার মত হলে- হপার পোঁকা দমন করতে নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।
এবং স্প্রে”র প্রনালী হিসেবেঃ সাইপরমেথ্রিন ১০ ইসি (রিপকর্ড, রেলোথ্রিন, সিনসাইপার, ফেনম, বাসাড্রিন ) বা ল্যামডা সাই হ্যালাথ্রিন ২.৫ ইসি বা ফেন ভেলারেট ২০ ইসি গ্রুপের মধ্যে যেকোন একটি কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। এজন্য প্রতি এক লিটার পানিতে এক মিলিলিটার হারে গাছের পাতা, মুকুল এবং ডালপালাসহ পুরো গাছে ভালমত কুয়াশাচ্ছন্ন করে স্প্রে করবেন।
- আরেক ধরণের ভাইরাস রোগ হয়েও মুকুল ঝরে যায়। অধিকাংশরা এই রোগকে পাউডারি মিলডিও রোগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এধরণের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ফুল আসার আগে একবার এবং গাছে ফুল উঠার পর আরেকবার “সালফার” জাতের ছত্রাকনাশক পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করবেন।
সাধারণত: কুমোলাস, ম্যাক-সালফার, থিওভিট বা রনভিট ছত্রাকনাশকঃ প্রতি এক লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
- অ্যানথ্রোকনোজ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রতি এক লিটার পানিতে ০১ মিলি প্রোপিকনাজল (টিল্ট) বা ১ গ্রাম কার্বোন্ডাজিম ( যেমনঃ অটোস্টিন বা ব্যাভিস্টিন বা ফরাস্টিন ইত্যাদির যেকোন একটি ) অথবা, ২ গ্রাম ডাইথ্যান এম৪৫ মেডিসিনটি মিশিয়ে ১০ দিন পর পর গাছের পাতা, ডাল এবং মুকুলসহ সর্বত্র স্প্রে করতে হবে।
- সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ টিপস হচ্ছে: আমের ফলন বেশি পেতে- আম যখন মারবেল আকৃতির ছোট ছোট হবে। তখন প্রতি এক লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার মিশিয়ে গাছের সর্বত্র সস্প্রে করবেন।
সতর্কতাঃ মনে রাখবেন, যখন গাছের ফল (আম) ৫০% – ৬০% হয়ে ফলন শুরু করবে, তখন কোন প্রকার স্প্রে করবেন না। এমনকি মুকুল ফোটার পরও স্প্রে করা যাবে না। কারণ, এই সময়টাতে অনেক উপকারী বেকটেরিয়া এবং পোঁকা/কীট পরাগায়নের জন্য মারা যেতে পারে। আর এসকল কীট/পোঁকাগুলো আমের পরাগায়নের জন্য এসে থাকে।
প্রয়োজনীয় প্রশ্ন উত্তর পর্বঃ
মুকুল আসার আগে আম গাছের পরিচর্যা
আম গাছে মুকুর আসার আগে গাছের পরিচর্যা করলে, ফলন বেশি হবে। ইনশাআল্লাহ! এজন্য খেয়াল রাখবেনঃ আম গাছে মুকুলের ফুল আসার দুই সপ্তাহ আগে সেচ পানি সরবরাহ করবেন। এবং গাছটি যদি দুই/তিন বছর বয়সী হয়, তাহলে ২০০ – ২৫০ গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানিতে টিএসপি এবং এমপি সার মিশ্রন করে গাছের গোড়ায় দিবেন।
আর যদি গাছের বয়স: ৪/৫ বছর বয়সী হয়; তাহলে প্রতি লিটার পানিতে ৩০০ – ৩৫০ গ্রাম হারে টিএসপি এবং এমপিও সার দিবেন। এছাড়াও ৭/৮ বছর বয়সী আম গাছের গোড়ায় ৪০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত সার প্রয়োগ করতে পারবেন। কোন সমস্যা হবে না।
আমের মুকুল আসার পর করনীয়
আমের মুকুল আসার পর সাধারণত বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়ে, মুকুলগুলো ঝরতে থাকে। এর প্রতিকারস্বরুপঃ আমের ফুলের মুকুল আসার ১০/১২ দিন পরঃ প্রতি এক লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার হারে রিপকর্ড অথবা সিমবুস ১০ ইসি এবং .০.৫ মিলিলিটার টিল্ট ২৫০ ইসি মেডিসিন একসাথে মিশ্রন করে আম গাছের সর্বত্র যেমনঃ মুকুল, গাছের পাতা এবং ডাল পালায় ভালমত স্প্রে করে দিতে হবে।
- Sarker Tahsin: The Musical Maestro and Digital Marketing Prodigy
- ( Bazar Gorom Lyrics ) বাজার গরম লিরিক্স আলী হাসান | Bangla Rap Song
- বাংলাদেশের সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪ – Ramadan Calendar 2024 Bangladesh ( Time , Date and PDF )
- ওরে কালাচান তোমার লাগি মন করে আনচান লিরিক্স (Kalachan) আদর কইরা ডাকব জান
- মা নিয়ে স্ট্যাটাস এবং ক্যাপশন | মা নিয়ে কিছু উক্তি , কবিতা, গল্প ও বাণী
এবং প্রাকৃতিকভাবে পরাগায়নের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতে আম বাগানে মৌমাছি চাষ করা যেতে পারে। অথবা, বাগানের চতুর্পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ চাষ অথবা অন্য প্রজাতির হাইব্রিড আম চাষ করা যেতে পারে।