ধর্ম ও ইবাদত

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ (Ayatul Kursi Bangla)

প্রিয় ভাই বোন! আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ এবং Ayatul Kursi Bangla বিস্তারিত (আয়াতুল কুরসি ডাউনলোড pdf), জানতে চান? পবিত্র গ্রন্থ কোরআনুল কারিমের সবচেয়ে বড় সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালার মহত্ত্ব ও বড়ত্ব  সম্পর্কে জানতে চাইলে, আয়তুল কুরসি বাংলা অর্থ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে  জানতে হলে, সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ুন।

আয়াতুল কুরসি শব্দের অর্থ কি

এটির আরবি উচ্চারণ হলোঃ آية الكرسي‎‎ অর্থাৎ আয়াত আল-কুরসি। আয়াতুল কুরসি শব্দের বাংলা অর্থঃ “সিংহাসন” বা “সিংহাসনের স্তবক”। ইংরেজিতে বলা হয়: Ayatul Kursi/ Ayat Al-verse যার ইংরেজি অর্থঃ The Throne (সিংহাসন). পরিভাষায় বলা যায়ঃ Allah is Ever-Living, Self-Subsisting, and All-Sustaining অর্থাৎ আল্লাহ তা”য়ালা চিরঞ্জীব, স্বয়ং-নির্ভরশীল এবং সর্বশক্তিমান।

আয়াতুল কুরসি আয়াত সংখ্যা

আয়াতুল কুরসি সূরা বাকারার অন্যতম একটি বড় আয়াত। যার কারণে অনেকেই হয়তোবা মনে করে থাকেন একাধিক আয়াত মিলে আয়াতুল কুরসি অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো আপনি যদি সূরা আল বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াতে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পারবেনঃ আয়াতুল কুরসির আয়াত সংখ্যা শুধুমাত্র একটি ( ০১ টি আয়াত)  ( Ayatul Kursi verse number is only one. )।

আয়াতুল কুরসি আরবি

পবিত্র কুরআনুল কারিমের আয়াতগুলোকে শুদ্ধভাবে পাঠ করা অন্যতম সুন্নাহ এবং প্রত্যেক মুমিন মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য এবং খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তাই শুদ্ধভাবে আরবিতে আয়াতুল কুরসী পাঠ করার জন্য হরকত, তানভিন ও তাশদীদ সহ উল্লেখ করলাম।

بِسۡمِ ٱللهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ

اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

অনেকেই সঠিকভাবে আরবি রিডিং পড়তে জানেন না, সে সকল পাঠকদের জন্য নিচে আয়তুল কুরসী বাংলা উচ্চারণ লিখলাম। আশা করি উপকৃত হবেন।

 আয়তুল কুরসী বাংলা উচ্চারণ – আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুউ ওলা নাউম। লাহু মা~ফিস সামা ওয়াতি ওমা ফিল আরদি। মান যাল্লাযি ইয়াশফাঊ ই’ন্দাহো ইল্লা বি ইজনিহী। ইয়া’লামু মা~বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খলফাহুম, ওয়লা য়িহিতুনা বিশাইয়্যিম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা আ”, ওসিআ” কুরসিইয়ুহুস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্বী, ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফযু হুমা ওয়াহুয়াল আলিউয়্যুল আজিম। (সূরাতুল বাকারাহ, আয়াত নাম্বার- ২৫৫)।

আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থ

পবিত্র কুরআনুল মাজীদের সূরা বাকারার গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম একটি  অংশ আয়াতুল কুরসীর বাংলা অর্থ  সহ দেওয়া হল। যাতে করে এই আয়াতের মর্ম ও  তাৎপর্য সম্পর্কে আপনি জানতে পারেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ  এই পবিত্র আয়াত টি পাঠ করার পূর্বে অবশ্যই আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) এবং বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম (পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি) পড়বেন। 

আরও পড়ুন ;  বাংলাদেশের সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪ - Ramadan Calendar 2024 Bangladesh ( Time , Date and PDF )

 আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থ – আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্ব চরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তার কাছে তার অনুমতি ছাড়া? বৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তার জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তার সিংহাসন সমস্ত আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন নয়। তিনি সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

বিঃদ্রঃ এখানে ”তাকে, তার” শব্দ দুইটির মাধ্যমে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালাকে বুঝানো হয়েছে।

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ছবি
অর্থসহ আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ শিখুন এবং PDF ডাউনলোড করুন
অর্থসহ আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ শিখুন এবং PDF ডাউনলোড করুন

আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ ছবিসহ আপলোড করলাম। ইসলামিক ওয়ালপেপার টি আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে স্ক্রিনশট দিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন, যাতে করে ভবিষ্যতে পুনরায় পাঠ করতে সুবিধা হয়। 

আয়াতুল কুরসি ডাউনলোড pdf

পরবর্তীতে যেকোনো সময় অফলাইনে পাঠ করার জন্য আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ সহ পিডিএফ ভার্সন বাংলা অর্থসহ দেওয়া হলো।

আয়াতুল কুরসি কোন সূরার কত নাম্বার আয়াত

মুসলিমদের কাছে পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সম্মান ও মর্যাদা হৃদয়ের সাথে  সম্পৃক্ত। পবিত্র কুরআনের  দ্বিতীয় অবস্থানে (২য় তম সূরা) উল্লেখিত সূরা আল-বাকারার 255 নম্বর আয়াতটি আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত।

আয়াতুল কুরসি কত পারায়

আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত সূরা আল বাকারার এই আয়াতটি পবিত্র কুরআনুল কারিমের তৃতীয় নাম্বার পারায় প্রথম পৃষ্ঠায় ( ৩য় পারা, ১ম পৃষ্ঠা, সূরা বাকারাহ, আয়াত- ২৫৫ নং)  লিপিবদ্ধ রয়েছে। 

আয়াতুল কুরসি পড়ার নিয়ম

সাধারণত আয়তুল কুরসী পাঠ করার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নীতি নাই। অর্থাৎ যেহেতু এটি একটি পবিত্র কোরআনের আয়াত, সুতরাং আপনি যেকোনো সময় যতবার ইচ্ছা পাঠ করবেন আপনার নেকির পরিমাণ ততই বৃদ্ধি পাবে। তবে ঘুমানোর আগে, বাহিরে গমন করার পূর্বে এবং ফরজ সালাতের পর পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ।

 এছাড়াও আয়াতুল কুরসী পড়ার বিষয়ে একটি হাদিস প্রচলিত আছে। আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,  ”যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পড়বে,  সে সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে রক্ষা পাবে। এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় পাঠ করবে, সে সকাল পর্যন্ত শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে”। সুতরাং হাদিসটার দিকে বুঝা যায়:  ফজরের নামাজ এবং মাগরিবের ফরজ সালাতের পর নিয়মিত আয়াতুল কুরসী পাঠ করা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং বিশেষ ফজিলত সম্বলিত। 

চার কুল ও আয়াতুল কুরসি

আমাদের দেশের অনেক ময় মুরুব্বী চার কুল ও আয়তুল কুরসী পাঠ করার মধ্যে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করেন।  যদিও হাদিসের দলিল দ্বারা বিশেষ কোনো তাৎপর্যতার কথা উল্লেখ পাওয়া যায়নি, তবে যেহেতু  কোরআনুল কারিমের আয়াত হিসেবে চার কুল ও আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করলে সোয়াব পাওয়া যাবে, ইনশাআল্লাহ।

 আয়াতুল কুরসি হলো পবিত্র কোরআনুল কারীমের দ্বিতীয়তম সূরা আল বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত। এবং চার কুল হল যথাক্রমেঃ 

  1. প্রথম কুলঃ সূরা এখলাস
  2. দ্বিতীয় কুলঃ সূরা নাস
  3. তৃতীয় কুলঃ সূরা আল ফালাক
  4. চতুর্থ কুলঃ সূরা কাফিরুন

আরও জানুনঃ হাদিসের আলোকে আয়াতুল কুরসির ফজিলত

সুপ্রিয় পাঠক/ পাঠিকা!  আয়াতুল কুরসী বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ  জেনে বুঝে শুদ্ধভাবে পাঠ করার ফজিলত ও তাৎপর্যতা রয়েছে।  ফরজ নামাজের পর বিশেষত ফজর ও মাগরিবের ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করা সবচাইতে বেশি ফজিলত পূর্ণ। এছাড়াও ঘুমানোর আগে Ayatul Kursi পাঠ করে শরীরে ফুঁক দিলে জিন শয়তানের ক্ষতির উপদ্রব হতে রক্ষা পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *