আপনি যদি গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে প্রথম রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সেরা দশটি গাড়ির ড্রাইভিং টিপস মেনে চলুন।
Summary Of Content: multyLoad
সেরা ১০টি গাড়ির ড্রাইভিং টিপস
নতুন চালক হিসেবে এই কৌশল গুলো অনুসরণ করলে আপনি নিরাপদ ভাবে গাড়ির ড্রাইভিং করতে পারবেন। একজন নতুন ড্রাইভার মানেই গাড়ি চালানোটা তার কাছে অনেক উত্তেজনাপূর্ণ এবং খুশির বিষয়। অনেকেই তো গাড়ির ট্রেস্ট ড্রাইভিং পাস ইত্যাদি করার সাথে সাথে প্রথম দিন থেকেই গাড়ি চালানোর নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বেরিয়ে পড়েন।
তবে সর্বদা এটা মনে রাখবেন গাড়ির লাইসেন্স পেয়ে যাওয়া মানে আপনি আপনি একজন ড্রাইভার কিংবা অভিজ্ঞ চালক নন। একজন অভিজ্ঞ ড্রাইভার এবং নিরাপদ ভাবে গাড়ি চালানোর জন্য নীচের সেরা ১০টি ড্রাইভিং টিপস অনুসরণ করতে পারেন।
গাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
১. আপনার গাড়ি সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় বিস্তারিত জেনে নিন –
আপনি রাস্তায় গাড়ি বের করার আগে, আপনার প্রিয় গাড়িটির বেসিক লে আউট এর সাথে পরিচিত হওয়া অত্যন্ত জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ। যদিও কেউ এই বিষয়টি একদিনে শিখতে পারে না, তবুও আপনার গাড়ির সম্পর্কে অন্তত তাত্ত্বিক বিষয়ক জ্ঞান থাকা উচিত।
যেমন আপনার গাড়ি সম্পর্কে মৌলিক বিষয়গুলো জানাঃ স্টিয়ারিং হুইল এবং ড্যাশবোর্ডের বোতামগুলো কিভাবে ব্যবহার করবেন, কিভাবে জ্যাক রাখবেন, জ্বালানি ট্যাংক এর ক্ষমতা কত ইত্যাদি সহ আরো কিছু বিষয় রয়েছে। যে সকল বিষয়ে অন্তত তাত্ত্বিক জ্ঞান থাকা একজন নতুন ড্রাইভার এর জন্য আবশ্যিক।
তাছাড়া আপনার গাড়ির ক্যাটাগরি অনুযায়ী গাড়ি ড্রাইভ করার জন্য আপনার অন্তঃস্থ মন সেট করা উচিত। হ্যাচব্যাক, সেডান বা এস ইউ ভি ইত্যাদি। যেহেতু এসকল প্রতিটি ক্লাসের সাথে কিছু বিশেষত্ব জড়িত আছে; উদাহরণস্বরূপ, গাড়ি পার্কিং করার বিষয়টিকে অনেক চ্যালেঞ্জিং মনে করে। সুতরাং গাড়ি চালানোর সময় কোন অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা বা আতঙ্ক এড়ানোর জন্য আপনার গাড়ি সম্পর্কে অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত।
আপনার শরীরের বডির সাথে গাড়ির সিট বেল্ট পড়ুন
২. গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার আগে সিট বেল্ট পড়ুন –
গাড়ি চালানোর সময় সমস্ত গাড়ির চালকদের অবশ্যই সিটবেল্ট পরতে হবে। সুতরাং আপনি একজন নতুন চালক কিংবা পেশাদার ড্রাইভার হোন না কেন, গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার আগে আপনার গাড়ি চালানোর প্রথম থেকেই সিট বেল্ট পরার অভ্যাস গড়ার চেষ্টা করুন।
গাড়ির সিট বেল্ট পরা টা শুধু বাধ্যতামূলক নয়, বড় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা বাস সংঘর্ষ থেকে নিজেকে রক্ষা করার সম্ভাবনা কমাতে অবশ্যই সিট বেল্ট পরা একটি কার্যকরী উপায়।
গাড়ি চালানোর আগে টুলস এডজাস্টমেন্ট করুন
৩. গাড়ি ড্রাইভিং করার আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় টুলস এডজাস্টমেন্ট করুন –
আপনার জন্য আরেকটি গাড়ির ড্রাইভিং টিপস হলো, গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার আগে সিট, লুকিং গ্লাস এবং স্টিয়ারিং হুইল প্রয়োজন মতো অ্যাডজাস্ট করে নিবেন। সে ক্ষেত্রে ড্রাইভিংয়ে নতুন হয়ে থাকলে, অন্যান্য পেশাদার বা অভিজ্ঞ ড্রাইভারদের কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন। মনে রাখবেন একজন নতুন ড্রাইভার হিসেবে, আপনার 7 ছন্দ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আগে থেকেই এই সমন্বয় বা এডজাস্টমেন্ট গুলো নির্ভুলভাবে শিখে নেওয়া প্রয়োজন।
গাড়ি চালানোর সময় হাত স্টিয়ারিন হইলে রাখুন
৪. গাড়ি চালানো কালীন আপনার উভয় হাত স্টিয়ারিং হুইলে রাখুন –
একজন নতুন চালক বা ড্রাইভিং শিক্ষানবিস হিসেবে, এক হাতে গাড়ি চালানো মোটেও উচিত নয়। আপনাকে অবশ্যই দুই হাত দিয়ে স্টিয়ারিং হুইল কি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে স্টিয়ারিং হুইল এর সঠিক পজিশন জানার জন্য আপনার পরিচিত অভিজ্ঞ ড্রাইভার এর সাজেশন নিতে পারেন। সেইসাথে স্টিয়ারিং হুইল ধরে রাখার জন্য যাবতীয় ড্রাইভিং টিপস বা কৌশল গুলো শিখে নিতে পারেন, যাতে একজন নতুন চালক হিসেবে অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমে যায়।
গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন
৫. গাড়ি চালানো কালীন মাঝারি গতি বজায় রাখুন –
একজন শিক্ষানবিস ড্রাইভার বা নতুন গাড়ির চালক হিসেবে, গাড়ি চালানোর সময় ধীরগতি বা মাঝারি গতি বজায় রাখা উচিত। যদিও উচ্চগতিতে ড্রাইভিং করলে অনেকের মনে প্রশান্তি আসে, তবে মনে রাখা প্রয়োজন যে, আপনি শুরুতে উচ্চ গতিতে গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবেন না। এতে করে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হতে পারে। ধরুন আপনার গাড়ির সামনে যদি হুট করে কোন ব্যক্তি বা বস্তু উপস্থিত হয়, তখন দ্রুতগতির গাড়ি যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারেন তাহলে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন।
সিগন্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহারে অভ্যস্ত হোন
৬. গাড়ির সিগন্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুন –
গাড়ির ইন্ডিকেটর গুরু আপনাকে ড্রাইভ করার সময় অন্যান্য ড্রাইভার দের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করবে। যেমন রাস্তার লেন পরিবর্তন করার আগে, কিংবা অন্য যানবাহনের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় এবং প্রধান রাস্তায় থামার আগে তার ইন্ডিকেটর ব্যবহার করার জন্য অভ্যস্ত হোন। এতে করে অন্যান্য গাড়ির চালকদের তাদের গতি সামঞ্জস্য করার জন্য আপনি সতর্ক করতে পারবেন এবং আপনি নিজেও নিরাপদ ভাবে টার্ন নিতে পারবেন।
গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহার করবেন না
৭. গাড়ি ড্রাইভিং এর সময় ফোনে ব্যাস্তথাকা এড়িয়ে চলুন –
সেরা ড্রাইভিং টিপস গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো, একজন নতুন চালক হিসেবে গাড়ি চালানোর সময় আপনি যথাসম্ভব মোবাইল ফোন ব্যবহার করা বা অন্য কোনো কার্যকলাপে মনোযোগ হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ গাড়ি ড্রাইভ করা অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে ইতিপূর্বে আমাদের দেশে অনেক সড়ক দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে।
গাড়ি চালানোর সময় যদি মোবাইল ফোনে কাউকে কল করা অথবা কারো সঙ্গে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়, অথবা ইমারজেন্সি কোনো কার্যকলাপে ব্যস্ত হতে চান। তাহলে প্রথমে গাড়িটিকে থামিয়ে উপযুক্ত স্থানে পার্ক করুন এবং মোবাইল ফোনে কথা বলুন বা আপনার ইমারজেন্সি কার্যক্রম সম্পাদন করুন। এছাড়াও গাড়ি চালানোর সময় কানে ইয়ারফোন অথবা হেডফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। যাতে করে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়িয়ে চলতে পারেন।
নতুন ড্রাইভার হিসেবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন
৮. গাড়ি চালানোর সময় আত্মবিশ্বাসী এবং শান্ত হোন –
নতুন ড্রাইভ করার ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সেরা ড্রাইভিং টিপস হলোঃ গাড়ি ড্রাইভ করার সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন এবং শান্ত থাকুন। অনেকক্ষেত্রে একজন নতুন চালক হিসেবে গাড়ি ড্রাইভ করার সময় কিছুটা ভয় ভীতি কাজ করে বা নার্ভাস হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এটি রাস্তায় চলাকালীন আপনার মোবাইলকে যেতে প্রভাবিত না করতে পারে। সেজন্য আত্মবিশ্বাসী হয়ে শান্তভাবে গাড়ি পরিচালনা করুন।
মনে রাখবেন আতঙ্কিত মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালানো রাস্তায় চলাচলরত অন্যান্য পথযাত্রীদের জন্য খুবই বিপদজনক হতে পারে। সুতরাং আপনি ড্রাইভিং দক্ষতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হলে ধীরে ধীরে গাড়ি চালানোর সময় বা ভ্রমণের দূরত্ব বৃদ্ধি করতে পারেন। এতে করে যেমনিভাবে গাড়ি ড্রাইভিং এর প্রতি আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে তার সাথে সাথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যাবে।
গাড়ি চালানোর সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স নিজের কাছে রাখুন
৯. গাড়ি ড্রাইভ করার সময় আপনার লাইসেন্স এবং বীমা নথি বহন করুন –
গাড়ির ড্রাইভ করেন এ সময়, আপনার সব গাঁড়ে চেক অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যেমন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে হবে। এই কাগজপত্র ছাড়া পুলিশ বা সার্জনের কাছে ধরা পড়লে, আইন অনুযায়ী জরিমানার হালে পড়তে পারেন, এমনকি শাস্তি পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং কখনো এই ধরনের ভুলের ও জরিমানার শিকার না হতে চাইলে, অন্তত অভিজ্ঞতার সাথে গাড়ি চালাবেন এবং গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজের কাছে বহন করবেন।
শান্ত মেজাজের গাড়ি চালাবেন
১০. বিরক্তি মেজাজ নিয়ে কখনই গাড়ি চালাবেন না –
একজন নতুন ড্রাইভার কিংবা পুরাতন চালক হিসেবে, ট্রাফিক রাস্তা অবশ্য অভ্যস্ত আপনাকে অতিরিক্ত ফোকাস রাখতে হবে। যেমন গাড়ি চালানোর সময়, মেজাজ ঠান্ডা রাখতে হবে। স্প্লিট সেকেন্ডের সিদ্ধান্তগুলি হয়তোবা আপনাকে নিরাপদ রাখতে পারে আবার আপনার জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
সুতরাং যখন আপনি অনেক পেরেশান বা চাপের মধ্যে থাকবেন, অর্থাৎ আপনার মেজাজ শান্তশিষ্ট না থাকলে গাড়ি না চালানোর উত্তম। মনে রাখবেন আপনার জীবনের মূল্য সত্যিই অনেক বেশি।
পরিশেষে,
সর্বশেষে আমি বলতে চাই, নতুন চাল কিংবা পুরাতন ড্রাইভার হোন না কেন সব সময় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন মেনে চলবেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজের কাছে রাখবেন। শান্তশিষ্ট অবস্থায় গাড়ি ড্রাইভ করবেন।
উল্লেখিত গাড়ি চালানোর সেরা দশটি ড্রাইভিং টিপস সম্পর্কে জানতে পারলেন। যদি নতুন ড্রাইভারদের জন্য আপনি কোন মতামত পেশ করতে চান; অনুগ্রহ করে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।।