রাজনৈতিক বক্তব্য কিভাবে শুরু করবেন? বক্তৃতার কৌশল শিখুন।
অনেক রাজনীতিবিদ জানেন না যে, রাজনৈতিক বক্তব্য কিভাবে শুরু করবেন। আপনি কি রাজনীতিতে ক্যারিয়ার গড়তে চান? একজন নেতা হতে চান? আপনি কি মঞ্চে উপস্থিত দর্শক ও শ্রোতাদের মন বক্তব্যের মাধ্যমে কেড়ে নিতে চান? তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তো চলুন রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার কৌশল সম্পর্কে জানা যাক।
Summary Of Content: multyLoad
রাজনৈতিক বক্তব্য কিভাবে শুরু করবেন
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা! এ আর্টিকেলে মূলত আমি বলব যে কিভাবে ছন্দে ছন্দে বক্তব্যের মাধ্যমে মঞ্চের উপস্থিত সকলের মন কেড়ে নিবেন! আমি এখানে একটি রাজনৈতিক বক্তব্যের ডেমু হিসেবে খসড়া উপস্থাপন করছি। আপনি এই খসড়াটিকে অনুসরণ করার মাধ্যমে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট তথ্যাদি পরিবর্তন করে যে কোন রাজনৈতিক মঞ্চে বক্তব্য শুরু করতে পারবেন।
সাধারণত আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি গড়া না রাজনৈতিক অঙ্গনে, যে কোন পলিটিক্স বিষয়ের বক্তব্য সাধারণত কোন ব্যক্তি কিংবা দলকে কেন্দ্র করে উপস্থাপন করা হয়।
রাজনৈতিক মঞ্চে নেতা ও দর্শকদের মন করে নেওয়ার কৌশল
তবে আপনার বুঝার সুবিধার্থে, এখানে আমি দল হিসেবে আওয়ামী লীগ/ বিএনপি এই দুইটি দলকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বক্তব্য উপস্থাপন করব।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই বক্তব্যটি পাঠ করার মাধ্যমে কখনোই ভাববেন না যে আমি নির্দিষ্ট কোন দল যেমন আওয়ামী লীগ বা বিএনপি দল করি, বরং এ ধরনের কোন দলের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই। এবং এই আর্টিকেলটি লেখার ক্ষেত্রে আমি একজন নিরপেক্ষ লেখক হিসেবে আপনার সামনে শুধুমাত্র রাজনৈতিক বক্তব্যের ডেমু খসড়া উপস্থাপন করছি।
ছন্দে ছন্দে রাজনৈতিক বক্তব্য পত্র
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
জানিনা কখন হারিয়েছি মন নিজেকে ফেলেছি হারিয়ে;
মুজিব/ শহীদ জিয়া তোমার রাজনীতিতে পা” বাড়িয়ে!
দিয়েছো দেশ, পেয়েছি স্বাধীনতা! এইতো হৃদয়ে রেখেছি ধীরে;
লক্ষ কোটি বাঙালির মুখে উচ্চারিত মুজিব/ জিয়া নামটা বলো ভুলি কেমন করে?
এই মহান সমাবেশে উপস্থিত আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি,
যিনি সুখ খোঁজে না আপন নীড়ে!
প্রাণের টানে এই আঙিনায়-
বারে বারে আসেন ফিরে।
যার চিন্তাভাবনা শুধু এই দল রাজনীতি ও মেহনতী মানুষকে ঘিরে। যিনি সবসময় যুক্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের মুক্তির কথা বলে থাকেন। সেই প্রিয় মানুষ! ভালো মানুষ হিসেবে যার কোন তুলনা নাই –
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ / জাতীয়তাবাদী দল এর কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সম্মানিত সভাপতি এবং জন মনোনীত নেতা বাবুল (আপনার নেতার নাম, যিনি উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি) ভাই।
এই মঞ্চে আরো উপস্থিত আছেন এমন একজন মানুষ; যিনি আমাদের মাথার ছাতা হয়েছেন। যিনি সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আমাদের মাথার উপর বটবৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। যার পরিচয় আলাদা করে আর বলার দরকার হয়না; আমার সেই প্রিয় মানুষটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ/ বিএনপি’র কালিয়াকৈর শাখার বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার ভাই।
এই মঞ্চে একজন ব্যক্তি উপস্থিত আছেন –
যিনি রাজনীতিতে পা বাড়িয়ে,
মেহনতি মানুষের হৃদয় কাড়িয়ে,
ভালোবাসার সীমানা ছাড়িয়ে,
জনতার অন্তরে নিয়েছে ঠাই!
সে আর কেউ নন; তিনি হলেন নন্দিত রাজনীতিবিদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ/ জাতীয়তাবাদী দল কালিয়াকোর শাখার যোগ্য সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ভাই।
এখানে আরো একজন ব্যক্তি উপস্থিত আছেন;
যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলে,
ন্যায় ও নীতির পথে চলে–
তাকে এই এলাকার সবাই চিনেন জানেন এবং একজন ভালো মানুষ হিসেবে মান্য করেন; আমার পরম শ্রদ্ধেয় ভীষণ সুপ্রিয় মানুষঃ আজকের এই অনুষ্ঠানের সহ-সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ / জাতীয়তাবাদী দলের কালিয়াকুর অঞ্চলের প্রচার সম্পাদক জনাব মোঃ রুবেল ভাই।
এমন চেয়ে আরো যারা উপস্থিত আছেন; তাদের সকলের প্রতি আমার হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে জানাই লাল গোলাপের শুভেচ্ছা এবং সালাম!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আপাতত পরিচয় পর্ব টা থাক,
এবার বক্তব্যের প্রসঙ্গে আসা যাক!
তোমাদেরকে স্বার্থন্বেষী প্রচারকারী পাপিষ্ঠ ব্যক্তিদের কে উদ্দেশ্য করে, কুসুমকুমারী দাশ একটি কবিতায় লিখেছিলেনঃ
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে,
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।
মুখে হাসি বুকে বল তেজে ভরা মন,
মানুষ হতেই হবে এই যার পণ।
কিন্তু কবি’র এই কল্পনা অল্পে না যেতেই উল্টে যায় চিত্র। অনেকেই স্ব ইচ্ছায় সৎ পথে চলার শপথ করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত চেষ্টার শেষটায় সফলতায় যাওয়া হয় না। সর্বদা সৎ পথ যেন তার সয়না। তারপর সে ছলে বলে কলে, সততা নষ্ট করে; নীতির মডেল ধরে অসৎ পথে থেকে যায়।
আচ্ছা এমন যদি হয়,
আমায় দেখে পৃথিবীর সবাই পেতো ভয়!
মন্দটাকে ধ্বংস করে,
ভালই দিতাম জগতপুরে।
খুশির জোয়ার ভরে দিতাম এই দুনিয়া ময়।
এমন যদি হয়…।
এমনটা হবে কি হবে না, তা নিয়ে কিন্তু কেউ ভাবে না। আবার অনেকেই আছে, সামনে এবং পাছে; যা বলে তা করেনা। আর যা করে তা বলে না। সুতরাং তাদের বিষয়ে কথা বলাই চলে না। কারণ আমরা তাদের দলে না।
যারা ভালোর দলে চলে, এবং ভালো কথা বলে।
তাদের নিয়ে লড়বো, সোনার বাংলাদেশ গড়বো।
আমাদের এই দেশে এমন নেতাও আছে, যারা সামনে এবং পাছে ভালো কথা বলে। অথচ তারায় লোক চক্ষুর আড়ালে খারাপ পথে চলে। আবার অনেকে আছে যাদের মুখে ও মনে ভিন্ন; তারা যা বলেন বাস্তবে থাকে না তার কোন চিহ্ন। তাই কোনটা মুখের কথা, কোনটা মনের কথা, আর শুধুমাত্র কথার – আমাদের সবাইকে বিচক্ষণতার সাথে বুঝতে হবে।
এই ধরনের মুখোশধারী মানুষদেরকে বুঝতে ভুল করলে, পরে কিন্তু মুক্তির পথ ও কূল কিনারা খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুতরাং –
আমরা এমন মানুষ চাইরে, যার ভিতরে এবং বাইরে, কোন তফাৎ নাইরে। হে উপস্থিত জনতা, হিসেবে নির্বাচিত তাকেই করো, যার কাছে এই দেশ ও জনগণ ই বড়।
কথায় আছেঃ বিশ্বাসে বানায় বস্তু, তর্কে বহুদূর! ছলনার কারণে হারানো বিশ্বাস ফেরানো খুবই কঠিন। কিন্তু এই প্রযুক্তির যুগে, যুক্তিময় উক্তি দিয়ে ভেজাল মুক্তির তথ্যকে সত্য দিয়ে, অভিনব টেকনিক মেলে, অর্থাৎ গরিবের বিশ্বাস নিয়ে খেলে।
কিন্তু তারা জানে না, কিংবা জানলেও মানে না, বিশ্বাস হারালে লোক চক্ষুর আড়ালে, নীতির যে ইতি পড়ে সেই খবর রাখে না।
আমরা চাই সবাই নীতির প্রতি প্রীতি থাক, মানুষ তার যোগ্যতার বলেই যোগ্য স্থানে যাক! কিন্তু আজকাল কিছু রীতি ও রীতি দেখে ইতি নিতেও ভীতি জাগে। যেমন ধরেন রাজনীতি!
অনেকেই রাজনীতিকে পণ্য ভেবে, পণ্য প্রচারের জন্য – অন্য ধরনের দন্য পন্থাকে উত্তম বলে গণ্য করে নিজেকে গুন্নন মনে করেন। আমরা কিন্তু এমন গুণন ছিটাবো না, অর্থাৎ নিজের ঢোল নিজে পেটাবো না।
যারা এমনটা করে, তাদের চকচকা চেহারার চুরা চরিত্রের চতুর চমকে চোঁখ ধাঁধালেও মনে ওদের স্থান নেয় না। বরং মন যাদের স্থান দেয়, মন তাদের ভালোবাসে।
তাই আপনাদের ভালবাসা নিয়ে, আপনাদেরকে ভালোবাসা দিয়ে, সর্বদা সত্য ও ন্যায়ের পথে লড়বো। এবং দুর্নীতিমুক্ত স্বপ্নের দেশ গড়বো।
তেমন একটা বক্তব্য দিতে পারি না, তবে টুকটাক কথা বলি আরকি। এই কথা নিয়েই যত ব্যথা, একজন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছিলেনঃ অনেক কথার অনেক দোষ, ভেবেচিন্তে কথা কস। যাই হোক পরিস্থিতি জেনে, এ ধরনের কথা টেনে, কথা বলাই ভালো।
আজকের এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও সভাপতি জনাব বাবুল ভাই, মানবতার সেবায় নিয়োজিত হয়ে জ্বালিয়েছে মুক্তির আলো। এই জ্বালো-জালো আগুন জ্বালো, এসব কালো স্লোগান ফলনা করে, জানো জানো আলো জালো বলে, ভালো ভালো কাজে যার কোন তুলনা নাই। সে আমাদের প্রিয় বাবুল ভাই।
সংগ্রামী জনতা! এই প্রীতিময় কথাগুলো থাক, এবার একটু বাবুল ভাইয়ের উন্নয়নের কথা বলা যাক।
আগে ছিল কাঁচা রাস্তা এখন হয়েছে পাকা,
আবার অনেক দুর্নীতিবাজের পকেট হয়েছে ফাঁকা।
সর্বদা সততার পর বলে, শক্ত পথে চলে –
দেশের জন্য জীবন দিতে সব সময় যিনি রাজি,
উন্নয়নের মার্কা প্রিয় নৌকার মাঝি। (আওয়ামী লীগ এর জন্য প্রযোজ্য)।
অথবা,
দেশের জন্য লড়তে শপথ করেন যিনি দৈনিক
শহীদ জিয়ার ধানের শীষের সৈনিক ( জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপির জন্য প্রযোজ্য)।
গরীব দুঃখীর পাশে দাঁড়িয়ে,
সব সময় যিনি দেন হাত বাড়িয়ে।
বারে বারে ঘুরে ঘুরে,
রোদ বৃষ্টির ঝরে পুড়ে-
সুখ দুঃখের কথা শুনে,
তাইতো আজ বাবুল ভাই, ঠাই নিয়েছে সবার মনে।
প্রিয় পাঠক/ পাঠিকা! ও আগামীর রাজনৈতিক প্রজন্ম, এভাবেই বক্তব্য শেষ করবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ একটি কথা না বললেই নয় যে, বর্তমানের অধিকাংশ রাজনীতিবিদ রাই দুর্নীতিবাজ। তারা কিন্তু দেশের উন্নয়ন করে না। সুতরাং তারা যারা দেশ ও দেশের জনগণকে ভালোবাসে না, দেশের উন্নয়ন করেন, তাদেরকে নিয়ে উন্নয়নের কথা বলবেন না।
বরং যারা উন্নয়ন করে ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করতে মগ্ন থাকে; গরিব অসহায় ও সাধারণ জনগণের সুখ-দুঃখের ভাগীদার হয়। তাদের জন্যই প্রশংসা মুখর উন্নয়নমূলক কথা বলবেন। এবং তারা ঠিক কোন সেক্টরে উন্নয়ন করেছে, ছন্দ আকারে সাজিয়ে গুছিয়ে নিজের সৃজনশীলতা ও বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে সেই সকল বিষয়গুলোই বক্তব্যে উপস্থাপন করবেন।
যদি ছন্দ বানাতে কোন সমস্যায় পড়েন, বা কষ্টসাধ্য হয়। তাহলে আপনার প্রিয় নেতার উন্নয়নের কথাগুলো কমেন্ট বক্সে লেখেন, আমি সে সকল কথাগুলোকে ছন্দ আকারে বানিয়ে দিতে চেষ্টা করব।
শেষ কথা,
উপরিউক্ত রাজনীতি বিষয়ক বক্তব্যের খসড়াটি পরে জানতে পারলেন যে রাজনৈতিক বক্তব্য কিভাবে শুরু করবেন। সেই সাথে যে কোন রাজনৈতিক অঙ্গনের উপস্থিত বক্তৃতা কিভাবে পেশ করবেন, সেরকম বক্তব্য দেওয়ার কৌশল সম্পর্কেও বলার চেষ্টা করেছি। এতক্ষণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।