
প্রিয় পাঠক, ওষুধ ছাড়াই গর্ভাবস্থায়,বাচ্চাদের, এবং বৃদ্ধ বয়সে সহজে ডায়াবেটিস কমানোর উপায়। ডায়াবেটিস এর নরমাল রেঞ্জ কত মাপার সঠিক সময় এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটির আয়োজন।
ডায়াবেটিসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আরও বিষয়ে জানতে পারেনঃ
- ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল?
- ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ? ইনসুলিন নিতে হবে কিনা জানুন
- খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল?
Summary Of Content: multyLoad
ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

ডায়াবেটিস কমানোর ১০টি কার্যকারি উপায় : আপনার ডায়াবেটিসের আগের অবস্থা Type 2 Diabetes থাকুক বা Type 1 Diabetes – ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। এখন আমরা সুগার নিয়ন্ত্রণ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ১০টি ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
আপনি যদি ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া ১০টি উপায়ের অন্তত ৫০% মেনে চলতে পারেন, তাহলে আপনাকে আর ডায়াবেটিস নিয়ে ভাবতে হবে না । আসুন জেনে নেওয়া যাক সেরা ১০টি উপায়ে ডায়াবেটিস কমানোর নিয়মঃ
১। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকায় রাখুন সব থেকে ভালো কার্বোহাইড্রেট –
যারা ব্লাড সুগার নিয়ে চিন্তিত তারা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারগুলি নিয়ে খুবই ভয়ে থাকেন । কিন্তু আপনি জানেন কি সব কার্বোহাইড্রেট কিন্তু blood sugar spike ঘটায় না । আপনাকে কার্বোহাইড্রেট এর মধ্যে ভালো এবং খারাপের পার্থক্যটা বুঝে মূলত ডাইবেটিস রোগীর জন্য উপকারী খাদ্য তালিকা থেকে যতটুকু সম্ভব যথাসাধ্য খারাপ সরল কাব্যহাইড্রেট গুলোকে কম করবেন। এবং যতটা সম্ভবপর হয় ভালো জটিল কার্বোহাইড্রেট গুলোকে তুলনামূলক বেশি পরিমাণে রাখবেন।
২।ফ্যাট বা চর্বি –
চর্বি একটি প্রাকৃতিক তৈলাক্ত পদার্থ যা প্রাণীর দেহে স্তর হিসাবে বা ত্বকের নীচে অর্গানের চারপাশে জমা হয়। অন্য কথায়, এটি প্রাকৃতিক গ্লিসারল এস্টার এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা সাধারণত ঘরের তাপমাত্রায় জমে যায় এবং কঠিন অবস্থায় থাকে। এটি প্রাণী ও উদ্ভিদ জীবনের একটি প্রধান উপাদান।
স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন বাদাম, জলপাই তেল, মাছের তেল ইত্যাদি ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন। তবে ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
৩। সুগার কমানোর উপায় হিসাবে দিনের শুরু প্রোটিন দিয়ে করুন –
বেশিরভাগ মানুষই সকালের খাবারে নাস্তায় কম প্রোটিন খেয়ে থাকে, আপনিও যদি এই দলে হন। তাহলে মনে রাখবেন, গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে যারা দিনের প্রথম খাবারেই বেশি প্রোটিন খান, তাদের সারা দিন ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখা সহজ হয় ।
৪ । খাবারে ফাইবার রাখুন –
“ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য খাবারে বেশি ফাইবার খেতে হবে” কথাটি হয়তো সবাই কমবেশি একাধিকবার শুনেছেন। আপনি শুনতে শুনতে হয়তো বিরক্ত হয়ে গেছেন । কিন্তু এটা তো আর অস্বীকার করতে পারবেন না যে আপনার খাদ্য তালিকায় যদি আপনি ফাইবার না রাখতে পারেন, তাহলে হয়তো ব্লাড সুগার কমানোর ক্ষেত্রে আপনি যতটুকু চেষ্টা করেন না কেন;; তার সবগুলোই বিফল যাবে।
শাকসবজি, ফলমূল ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৫। Sugar Free থেকে সাবধান হন –
আপনার ডায়াবেটিস আছে শুনলেই দোকানদার নানারকম Sugar Free খাবার আপনার হাতে ধরিয়ে দেবেন। খাবারের প্যাকেটের গায়ে Sugar Free, Reduced Sugar, No sugar added – এরকম অনেক শব্দ পাবেন। এগুলি দেখে বিভ্রান্ত হবেন না । এই সব খাবার খেলে আপনার যে ব্লাড সুগার বাড়াবে না এরকম কোন নিশ্চয়তা নেই! বরং ৯৯% ক্ষেত্রে দেখা য়ায় এইসব খাবারগুলি অনেক বেশি ব্লাড সুগার বাড়ায়। ফলে এগুলি থেকে সাবধান হবেন।
৬। পর্যাপ্ত পানি পান করুন –
পর্যাপ্ত পানি পান করলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা বেশি পানি পান করেন তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
তাই নিয়মিত পানি পান রক্তকে রিহাইড্রেট করতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এবং চিনিযুক্ত পানীয় রক্তের গ্লুকোজ বাড়ায়, ওজন বাড়ায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
৭। নিয়মিত ব্যায়াম করুন –
নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে সঠিক ওজন বজায় রাখতে এবং আপনার চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
দ্রুত হাঁটা, দৌড়ানো, হাইকিং, বাইক চালানো এবং সাঁতারের মতো ব্যায়াম করা যেতে পারে।
ব্যায়ামের অন্যতম সেরা উপায় হল হাঁটা। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটুন। এটি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ও সাহায্য করবে।
৮। স্ট্রেস লেভেল ম্যানেজ করুন –
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করে।
স্ট্রেসের সময় গ্লুকাগন এবং কর্টিসলের মতো হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলি রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায়।
ব্যায়াম এবং মেডিটেশন মানসিক চাপ কমায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৯। পর্যাপ্ত ঘুমান –
সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ইনসুলিনের মাত্রাকেও প্রভাবিত করে, যা ক্ষুধা এবং ওজন বৃদ্ধি ও করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব গ্রোথ হরমোন কমায় এবং কর্টিসলের মাত্রা বাড়ায়। পর্যাপ্ত ঘুম আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
১০। ডায়াবেটিস কমাতে এড়িয়ে চলুন ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান –
ধূমপান এবং মদ্যপান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, যা ইনসুলিন প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে। তাই ডায়াবেটিস কমাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন।
এবার চলুন! ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সংক্রান্ত সাধারণ অন্যন্য বিষয়াবলী সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
ডায়াবেটিস এর নরমাল রেঞ্জ কত
ডায়াবেটিস এর নরমাল রেঞ্জ বের করতে ২টি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একটি সম্পূর্ণ খালি পেটে এবং অন্যটি সকালের নাস্তার ২ ঘন্টা পরে।
বেশিরভাগ সুস্থ ব্যক্তির জন্য, ডায়াবেটিস এর নরমাল রেঞ্জ নিম্নরূপ:
- খালি পেটে ৪.০ থেকে ৫.৪ mmol/L (৭২ থেকে ৯৯ mg/dL)
- খাওয়ার ২ ঘন্টা পরে ৭.৮ mmol/L (১৪০ mg/dL) পর্যন্ত
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, রক্তে শর্করার নরমাল রেঞ্জ নিম্নরূপ:
- খাবারের আগে: টাইপ 1 বা টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ৪ থেকে ৭ mmol/L
- খাবারের পর: টাইপ 1 ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ৯ mmol/L এর নিচে এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস আছে এমন লোকেদের জন্য ৮.৫ mmol/L এর নিচে
সুতরাং ডায়াবেটিসের নরমাল রেঞ্জ হলোঃ ৪.০ থেকে ৮.৫ পর্যন্ত। তবে যদি এর চাইতে কম হয় বা এর বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ডায়াবেটিস মাপার সঠিক সময়
ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি হয় না। ফলে তাদের ইনসুলিন নিতে হয়। উচ্চ রক্তে শর্করা ডায়াবেটিস রোগীদের হার্ট অ্যাটাক, কিডনি রোগ এবং লিভারের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। আপনি বাড়িতে বা ডাক্তারের কাছে গিয়ে এটি পরিমাপ করতে পারেন। এখন অবশ্য বাজারে অনেক কিট পাওয়া যায়। যা দিয়ে আপনি সহজেই ঘরে বসে মাপতে পারবেন।
ডায়াবেটিস মাপার সঠিক সময় আর পদ্ধতি জানেন কি? যখন তখন মাপলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না। জেনে নিন রক্তে শর্করা পরিমাপের সঠিক সময়-
- সকালে নাস্তা খাওয়ার আগে অর্থাৎ ৬-৮ ঘণ্টা খালি পেট থাকতে একবার মাপুন এবং সকালের নাস্তার ২ ঘণ্টা পর।
- আপনার প্রতিদিনের অনুশীলনের আগে এবং পরে।
- এছাড়া দুপুরের খাবারের আগে ও এর ২ ঘণ্টা পর আবার ও মাপতে হবে
- রাতের খাবারের আগে একবার ও খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর আরও একবার।
এভাবে দিনে মোট ৬ বার পরীক্ষা করতে হবে। এছাড়াও খাদ্য তালিকার দিকে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়
আপনারা যারা, ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয় এই বিষয়টা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চান। তাদের জন্য আলোচনার এই পর্বে ডায়াবেটিস কত মাত্রায় হলে ইনসুলিন নিতে হয় তা জানাব।
টাইপ-১ ক্যাটাগরির ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিন ছাড়া চিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই। কারণ এ ধরনের ডায়াবেটিস রোগীর শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। তাই তাদের ইনজেকশন দিয়ে ইনসুলিন নিতে হয়।
এখানে, টাইপ-২ ক্যাটাগরির রোগীদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের মাত্রা ১৬.৭ মিলিমল/লি (mmol/l) বা ৩০০ গ্রাম/ডেলিটার (mg/dL) বা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা HbA1-এর ১০% বেশি হলে ইনসুলিন এছাড়াও হৃদরোগী, জন্ডিস রোগী, কিডনি রোগী, লিভারের রোগী এবং গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন নিতে হবে। কারণ তাদের ক্ষেত্রে ওষুধ দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
ডায়াবেটিস সারানোর উপায় কি

যেহেতু ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় করা যায় না। তাই ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার পর সুস্থ জীবনযাপনের অন্যতম শর্ত হলোঃ ডায়াবেটিস সারানোর উপায় কি তা জানা। তাহলে চলুন জেনে নিই ডায়াবেটিস সারানোর উপায় সম্পর্কে।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান।
- কার্বোহাইড্রেট যুক্ত শাকসবজি বেশি করে খান।
- ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত ফল চিবিয়ে খান।
- বেশি চর্বিযুক্ত খাবার কম খান।
- প্রতিদিন ৩০ – ৪০ মিনিটের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম এবং দ্রুত হাঁটা।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ক্যালরি খাওয়া।
- মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
- ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
- সর্বোপরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন গ্রহণ করুন বা মুখের ওষুধ খান।
ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে
ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় করা সম্ভব নয়। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সম্ভব হতে পারে। সম্প্রতি সেল মেটাবলিজম জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, দুটি রূপের মধ্যে, ওষুধ ছাড়াই টাইপ 2 অর্থাৎ নন-ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
যুক্তরাজ্যের নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপক রয় টেলরের নেতৃত্বে কয়েক বছর আগে প্রকাশিত ডায়াবেটিস রিমিশন ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যে কোনো ওষুধ না খেয়ে নিবিড় ওজন কমানোর মাধ্যমে টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
এমন কোনও নির্দিষ্ট খাবার নেই যা আপনাকে ডায়াবেটিস নিরাময় করবে। যাইহোক, বেশ কয়েকটি গবেষণায় ডায়াবেটিসকে অতিরিক্ত ওজন এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাবের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। তাই ওজন কমানো হতে পারে ওষুধ ছাড়াই ঘরে বসে ডায়াবেটিস কমানোর উপায়।
ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে করনীয়
আপনি যখন ডায়াবেটিসের সাথে বসবাস করছেন, এমনকি সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে যে পদক্ষেপগুলি নিতে হবে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকা সত্ত্বেও, কখনও কখনও সেগুলি নিয়মিত অনুসরণ করা কঠিন হতে পারে। আপনার ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে করনীয় কী তার একটি সংক্ষিপ্ত সারাংশ নীচে দেওয়া হল:
- সময়ের আগে পরিকল্পনা করুন।
- আপনার নির্ধারিত ডায়াবেটিসের ওষুধ খাওয়া চালিয়ে যান।
- আপনার ডায়াবেটিস পরিচালনার জন্য নির্ধারিত খাদ্য পরিকল্পনায় থাকুন।
- প্রচুর পানি এবং অন্যান্য তরল পান করুন।
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
অনেকে নিয়মিত ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাসের পরামর্শ : তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়মিত ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিস দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ডাঃ আনউইনের একটি গবেষণা পত্র ওয়েবসাইট গাইডলাইন ইন প্র্যাকটিস-এ প্রকাশিত হয়েছিল। চিনিযুক্ত খাবার যেমন মিষ্টি এবং বেশি পরিমাণে শর্করাযুক্ত খাবার (কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করা বা ব্লাড সুগার বাড়ায়) এবং চর্বি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ডাঃ আনউইনের আরেকটি গবেষণা অনুসারে, কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার টাইপ 2 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। এটি রক্তে সুগার বা সুগারের মাত্রা কমিয়ে দেয় যার ফলস্বরূপ উল্লেখিত বিষয়বস্তু আলোচনা পর্যালোচনায় বলা হয়েছে যে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ এবং ওষুধ সেবন করলে ডায়াবেটিস খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

আপনার যদি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে তবে আপনার গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের সময় নিজেকে এবং আপনার শিশুকে সুস্থ রাখতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন হবে। আপনার ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দিবে :
- দিনে চার বা তার বেশি বার আপনার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করুন
- কিটোন, রাসায়নিকের জন্য আপনার প্রস্রাব পরীক্ষা করুন যার অর্থ আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান
- ব্যায়াম অভ্যাস করুন
- আপনার ডাক্তার আপনার ওজন এবং আপনার শিশুর বিকাশ নিরীক্ষণ করবেন। আপনার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা আপনাকে ইনসুলিন বা অন্যান্য ওষুধ দিতে পারে।
বাচ্চাদের ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
বাচ্চাদের ডায়াবেটিস কমানোর উপায়: ভিটামিন ডি বাচ্চাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
যে সকল শিশুরা বড় হওয়ার সময় এবং শৈশবে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ডি পায় তাদের পরবর্তী জীবনে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম থাকে। বিশেষ করে, টাইপ 1 ডায়াবেটিস এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত শারীরিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
ডায়াবেটিস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় ৮৬৭৬ শিশু পরীক্ষা করা হয়েছে। তারা টাইপ 1 ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে ছিলেন। আইলেট অটোইমিউনিটি সহ ৩৭৬ শিশুকে ১০৪১ সুস্থ শিশুর সাথে তুলনা করা হয়েছিল।
এছাড়াও, যেসব শিশু জেনেটিক্যালি টাইপ 1 ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং যারা শৈশবে ভিটামিন ডি কম পেয়েছিল তারা সবাই ইনলেট অটোইমিউনিটি তৈরি করে।
কিন্তু যদি শিশুদের সময়মতো পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি দেওয়া হয়, তাহলে তাদের টাইপ 1 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
বৃদ্ধ বয়সে ডায়াবেটিস কমানোর সহজ উপায়
বৃদ্ধ ব্যক্তিরা সাধারণত টাইপ ২ ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। পরীক্ষা করুন এবং একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। আপনার রক্তে উচ্চ শর্করা আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে আপনার ডাক্তার আপনার প্রস্রাব এবং রক্ত পরীক্ষা করবেন।
মনে রাখবেন! যত তাড়াতাড়ি ডায়াবেটিস নির্ণয় এবং চিকিত্সা করা হয়, রোগীর জন্য তত ভাল। প্রাথমিক চিকিৎসা টাইপ 2 ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে।
- এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয়? ওষুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- পেগনেন্ট টেস্ট কিভাবে করে? ঘরোয়া পদ্ধতিতে সঠিক সময় জানুন
- ১৬ টি ডায়াবেটিস এর লক্ষণ। প্রতিরোধ করার উপায় কি জানুন
- ডায়াবেটিসের মাত্রা, রেঞ্জ কত? রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয়
- ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়, এর থেকে মুক্তির উপায় কি?
সবশেষে,
আশা করি, আমাদের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা, বৃদ্ধ বয়সে, বাচ্চাদের এবং নারী পুরুষসহ সকল বয়সী যেকোন মানুষের সহজে ডায়াবেটিস কমানোর উপায়, ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে করনীয় এবং দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন।
আমরা আজকে চেষ্টা করেছি আপনাদের মাঝে ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি এই সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য। আশা করি এই তথ্যগুলো জেনে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। ধন্যবাদ।